সমুদ্রযান মাৎসায়া কী? কি করবে এটি সমুদ্রের গভীর গিয়ে?
পৃথিবী, সৌরজগৎ-এর একমাত্র এমন একটা গ্রহ যেখানে প্রাণ আছে। শুধু যে প্রাণ আছে তা নয়, বরং এই গ্রহে বিভিন্ন রকম বহু মূল্যবান সম্পদ রয়েছে। আমদের পৃথিবীতে তিন ভাগ জল ও এক ভাগ স্থল রয়েছে।
সভ্যতার গড়ার দিকে মানুষ যে সম্পদ গুলি আবিষ্কার করেছে তা সবই ছিলো স্থল ভাগে। কিন্তু যতো মানুষ আধুনিকতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ততো মানুষের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এবং এই চাহিদা পূরণে স্থলভাগের সম্পদ কম পড়ে যাচ্ছে। তাই মানুষ এখন সমুদ্রের গভীরে যাচ্ছে মূল্যবান সম্পদের খোঁজে।
তাই সেই জন্য মানুষ সমুদ্রের গভীরে যাওয়ার জন্য সাবমেরিন তৈরি করে। মূলত সাবমেরিন জলের মধ্যে থেকে শত্রু পক্ষের জাহাজ কে ধ্বংস করার জন্য তৈরি হয়ে ছিল। তবে বর্তমানে এখন সেটা সমুদ্রের মধ্যে বিভিন্ন গবেষণা মূলক অভিযানে ব্যবহার করা হয়।
Matsya 6000 |
ঠিক সেই রকমই একটি যান ভারত আবিষ্কার করেছে। যার নাম হলো সমুদ্রযান "মৎস 6000"।মত্স 6000 নামে পরিচিত ডুবোজাহাজটি প্রায় দুই বছর ধরে তৈরি হচ্ছে। 2024 সালের প্রথম দিকে চেন্নাইয়ের উপকূলে বঙ্গোপসাগরে এটির প্রথম সামুদ্রিক পরীক্ষা করা হবে।
কোথায় তৈরি হয়েছে এই যান
National Institute of ocean technology |
ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অব ওসান টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা মত্স্য 6000 তৈরির দায়িত্বে রয়েছে। সাবমার্সিবেলের ডিজাইন, উপকরণ পরীক্ষা পদ্ধতি সার্টিফিকেশন,প্রাচুর্য ও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকলগুলির একটি বিস্তৃত পর্যালোচনা পরিচালনা করেছে। আর্থ সায়েন্স মন্ত্রকের সচিব এম রবিচন্দ্রন জানিয়েছেন , গভীর মহাসাগরে মিশনের অংশ হিসেবে সমুদ্রযান মিশনের কাজ চলছে। 2024 সালের প্রথম দিকেই 500 মিটার গভীরতায় এটির পরীক্ষা করা হবে।
সমুদ্রের গভীরে গিয়ে কী কাজ করবে
নিকেল ,কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, হাইড্রোথার্মাল সালফাইড ও গ্যাস হাইড্রেটের মত মূল্যবান খনিজগুলির অনুসন্ধানের পাশাপাশি মত্স্য ৬০০০ হাইড্রোথার্মাল ভেন্টগুলিতে উপস্থিত কেমোসিন্থেটিক জীববৈচিত্র্য ও সাগরের নিচের তাপমাত্রা মিথেন সিপগুলিরও অনুসন্ধান করবে।
কি কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই সমুদ্রযানে
এনআইওটি-র পরিচালক জিএ রামদাস বলেছেন, তিনজনকে মত্স্ 6000 এ সমুদ্রের নিচে পাঠান হবে। তাই এই গোলকটির ব্যাস ২.১ মিটার রাখা হয়েছে। গোলকটি 6000 মিটার গভীরতায় 600 বার (সমুদ্রতলের চাপের থেকে 600 গুণ বেশি) চাপ সহ্য করতে পারবে। সেই কারণে এটি ৮০ মিলিমিটার পুরু টাইটানিয়াম খাদ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই সমুদ্রযানে 12-16 ঘণ্টার জন্য অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে। এটি 96 ঘণ্টা অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, গোলক ব্যাতীত সব কিছুই তাদের কাছে এখন অপ্রয়োজনীয়। একটি অফিসিয়াল সমুদ্র ট্রায়াল পরিচালনার কথাও তাঁরা ভাবছেন। তাই এরজন্য সার্টিফিকেট পেতে DNV-GLর সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানিয়েছে, সাবমার্সিবল স্থাপনের মত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতিও অনুসরণ করা হবে। জাহাজ থেকেই এই ব্যবস্থাটি কার্যকর করা হবে। জাহাজটি সমুদ্রের ওপর থাকবে। সেখান থেকেই গোলকটির সঙ্গে যোগাোযোগ করা হবে।
এই মিশনটি 2026 সালের মধ্যে শেষ করা হবে বলেও আশা করা হচ্ছে। এটি লক্ষনীয় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, ফ্রান্স, চিন সহ কয়েকটি দেশের পর মানুষ চালিত সাবমার্সিবল তৈরি করলো ভারত।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন